রবিবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৫৬ অপরাহ্ন
খায়রুল খন্দকার টাঙ্গাইল :
প্রেমের টানে পীরের বাড়িতে আসা ভারতীয় তরুণীকে ঘিরে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। বাড়িতে আনার পরই ওই তরুণীকে একরকম গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে। বিউটি খাতুন নামের ওই তরুণী সম্প্রতি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ কলকাতা থেকে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার সহদেবপুর ইউনিয়নের বিন্যাউড়ী গ্রামের বাসিন্দা খাদেম হোসেনের কাতার প্রবাসী ছেলে মামুনের কাছে ছুঁটে আসেন। মামুন আসান পীরের নাতি। বিউটি খাতুন ভারতের কলকতার বর্ধমান শহরের শেখ হানিফের মেয়ে। খবর পেয়ে ওই তরুণীকে দেখার জন্য স্থানীয়রা ভিড় করলেও তাদের সামনে আনতে নারাজ প্রবাসীর পরিবার। পার্শবর্তী দেশ ভারতীয় নারী ওই পীরের বাড়িতে আসার বিষয়টিকে ভিন্নভাবে দেখছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় এক মাস আগে কাতার প্রবাসী মামুন (২৮) দেশে ফিরেন। এর কয়েকদিন পর এক আত্মীয়কে সঙ্গে নিয়ে মামুন ভারতে যান। সেখান থেকে গত শুক্রবার ওই তরুণীকে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। পরদিন শনিবার কোর্ট ম্যারেজ ও স্থানীয় কাজীর মাধ্যমে ওই তরুণীর সঙ্গে মামুনের বিয়ে সম্পন্ন করা হয়। ওই তরুণী আসার খবর পেয়ে স্থানীয়রা তাকে দেখার জন্য বাড়িতে গেলে তরুণী পর্দা করে এমন অজুহাতে তাদেরকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের লোকজনও দেখার জন্য ওই বাড়িতে গিয়ে ফিরে যাচ্ছে। এছাড়াও গণমাধ্যমকর্মীরা ওই বাড়িতে গেলে তথ্য না গিয়ে উল্টো তাদের সঙ্গেও খারাপ আচরণ করেন প্রেমিক মামুন ও তার পরিবারের সদস্যরা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য পরিতোষ চন্দ্র পাল বলেন, ‘ফেসবুকের মাধ্যমে মামুনের সঙ্গে ওই ভারতীয় তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে মামুন প্রায় এক মাস আগে প্রবাস থেকে নিজ দেশে ফিরেন। এর কিছুদিন পর মামুন ভারতে গিয়ে ওই তরুণীর পরিবারের সম্মতিতে গত শুক্রবার তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। পরদিন কাজীর মাধ্যমে তাদের বিয়ে পরানো হয়। মামুনের দাদা পীর হওয়ায় তারা বিষয়টি নিয়ে তেমন আলোচনা করছেন না।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানান, গত পাঁচদিন আগে মেয়েটিকে মামুন বর্ডার থেকে তাদের বাড়িতে নিয়ে আসে। আনার পর ওই মেয়েটিকে কেউ দেখতে পারেনি। কারও সাথে মেয়েটি সম্পর্কে কোন কথাও বলতে চায় না তারা। পীরের বাড়ি হওয়ায় মেয়েটিকে এক রকম গৃহবন্দী (পর্দাশীল) করে রাখা হয়েছে। ওই বাড়ির অন্যান্য নারীরা তেমন পর্দা করে না। মূলত মামুন কাতার থাকার সময় ফেসবুকে ওই তরুণীর সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এরপর ওই মেয়েটিকে এনে বিয়ে পরানো হয়। বিয়ের সময় ওই তরুণীর পক্ষে তার পরিবারের কেউ উপস্থিত ছিল না।
কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোল্লা আজিজুর রহমান বলেন, ‘ভারতীয় ওই তরুণী পশ্চিমবঙ্গ থেকে বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। পুলিশ সদস্যরা ওই বাড়িতে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছে। বিউটি খাতুন নামের ওই ভারতীয় তরুণীর সাথে কাতার প্রবাসী মামুনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এরপরই প্রেমের টানে ভারতীয় তরুণী মামুনের বাড়িতে আসে।