শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৭ অপরাহ্ন
মোহাম্মদ ইয়াছিন,ফটিকছড়ি চট্টগ্রাম শহর থেকে মাত্র দেড় ঘন্টার দূরত্বে ফটিকছড়ি উপজেলা হারুয়ালছড়ি ইউনিয়নে বিখ্যাত রান্ঙাপানি চা বাগানের কোল ঘেষে এই বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যটি। ২০১০ সালের ৬ এপ্রিল এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১১৭৭.৫৩ হেক্টর জমি নিয়ে এই বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্যটি গঠিত। যেখানে রয়েছে ১২৩ প্রজাতির পাখি। রঙ-বেরঙের এসব পাখির মধ্যে রয়েছে কাঠময়ূর ও মথুরা। আছে কাউ ধনেশ ও হুতুম পেঁচাও। বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদের সমারোহ থাকার কারণে চিরসবুজ এই বনে এমন কিছু প্রজাতির পাখি পাওয়া গেছে, যা অন্য কোনো বনে সচরাচর দেখা যায় না। এর মধ্যে রয়েছে হুদহুদ, চোখ গেল, নীলকান্ত, বেঘবৌ, আবাবিল। এসব পাখির আকার-আকৃতি, বর্ণ ও স্বভাবে বৈচিত্র্যময়। তাই প্রতিদিনই ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফার আর প্রকৃতি প্রেমীরা গুরতে আসেন এই অভয়ারণ্যে ।
বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে এক গবেষণায় পাখির এসব প্রজাতির সন্ধান পায় গবেষক দল। এ অভয়ারণ্যে নানা প্রজাতির পাখির সঙ্গে শীতকালে যোগ দেয় বিভিন্ন অতিথি পাখির দল। এদের বিচরণে চিরসবুজ বন পরিণত হয় পাখিরই আলাদা এক রাজ্যে। এখানকার উল্লেখযোগ্য বন্যপ্রাণীর মধ্যে রয়েছে— বানর, হনুমান, মায়া হরিণ, বনছাগল, চিতা বিড়াল ও মেছোবাঘ। অভয়ারণ্যটিতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ। যেমন সেগুন, গর্জন, চাপালিশ, গামারি, ছাতিয়ান, চুন্দুল, গুটগুটিয়া ইত্যাদি। বাংলাদেশের সবচেয়ে উঁচু বিরল প্রজাতির বৃক্ষ বৈলামও আছে সেখানে। যার উচ্চতা প্রায় ১০০ মিটার। যা হাজারিখিল ছাড়া বাংলাদেশের আর কোথাও প্রায় নেই বললেই চলে। এছাড়া সেখানে আছে বিখ্যাত রাঙাপানি চা বাগান, পাহাড়, অরণ্য, ঝরনা, ট্রেইলসহ আরও অনেক কিছু।
চা বাগান আর বনের সৌন্দর্য উপভোগে আসা দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে ট্রি ওয়ার্ক, ক্যাম্প এর জন্য নির্ধারিত নিরাপদ জায়গা(তাবুসহ), পিকনিক এর জন্য নির্ধারিত জায়গা, বনের ভিতর ট্র্যাকিং এর জন্য প্রশিক্ষিত গাইড তৈরি করছে উপজেলা প্রশাসন এবং ফরেস্টার রেঞ্জ কর্মকর্তারা। এই বিষয়ে চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের ফরেস্টার হাজারিখিল রেঞ্জ কর্মকরতা সিকদার আতিকুর রহমান বলেন বনজীবী ও দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আশা দর্শনার্থীরা টিকেট কেটে ভোর থেকে এই অভয়ারণ্যে প্রবেশ করতে পারবে। তবে প্রবেশ করে পশুপাখি শিকার অথবা কোনো ধরনের অপরাধের সঙ্গে যাতে কেউ যুক্ত হতে না পারে সেজন্য বন বিভাগ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।