সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৯ অপরাহ্ন
কামরুল হাসান, মিরসরাই (চট্টগ্রাম): ইলিশ শিকারের ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে অনেক আশা নিয়ে নদীতে গিয়েও জালে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ ধরা না পরায় হতাশ মিরসরাইয়ের প্রায় সাড়ে ৬শ জেলে। বিগত দিনের ধারদেনা নিয়ে চরম দুঃশ্চিন্তায় তারা। তেল খরচও না ওঠায় নদী বিমুখ হয়ে পড়ছেন অনেক জেলে। যাওয়ার আগে তাদের মধ্যে উচ্ছ্বাস থাকলেও আশানুরূপ ইলিশসহ অন্যান্য মাছ না পাওয়ায় তাদের মাঝে চরম হতাশা দেখা দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মিরসরাইয়ের ডোমখালী সাহেরখালী ঘাঁটে সাগরে রূপালী ইলিশসহ অন্যান্য মাছ ধরতে যাওয়া জেলেদের জন্য অপেক্ষা। সেখানে চার ঘণ্টা অপেক্ষার পর বেলা সাড়ে ৪টার নাগাদ বোট নিয়ে ফিরতে দেখা যায় জেলেদের। তবে তারা চুনোপুটি, ছোট চিংড়ি, পোয়াসহ নানা সামুদ্রিক মাছ ধরে আনলেও অনেকের কপালে ঝোটেনি রূপালি ইলিশ। তবে কারো কারো জালে এসেছে দু’চারটি ছোট ইলিশ।
বঙ্গোপসাগরের স্বন্দ্বীপ চ্যানেলের মিরসরাইয়ের ডোমখালী ও সাহেরখালী এলাকা দেশের চারটি ইলিশ প্রজনন ক্ষেত্রের একটি বলে এতোদিন বিবেচিত হতো। এখন ইলিশ মাছের আকাল সময়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরও তাদের ধারণা পাল্টাচ্ছেন। তারা একদিকে যেমন ড্রেজিং এর মাধ্যমে বালু উত্তোলনের কারণে অতিরিক্ত দূষণকে দায়ী করছেন, তেমনি দেশে গত কয়েক বছর ধরে সরকারি নিষেধাজ্ঞা সময়ে অতিরিক্ত মা ইলিশ আহরণের কারণে সাগরে রুপালি ইলিশ কমে যাচ্ছে। পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনকেও দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আবার অনেক জেলেরা বলছেন, স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় সাগরে মিষ্টি পানি ঢুকার কারণেও ইলিশ মাছ না পাওয়ার কারণ হিসেবে দেখছেন তারা।
মিরসরাই মৎস্য অফিসের তথ্য অনুযায়ী, মিরসরাইয়ে ২০১৮ সালে ইলিশ আহরণ হয় ৩৪২ দশমিক ১ টন। ২০১৯ সালে ১৯ দশমিক ৫ টন কমে দাঁড়ায় ৩২২ দশমিক ৬ টনে। ২০২১ সালে এসে আবারো ইলিশ আহরণ কমে যায়। ওই বছর আহরণ হয় ২৫২ দশমিক ৩ টন। ২০২২ সালে আহরণ হয় মাত্র ১৪৭ দশমিক ৪ টন, যা ২০২১ সালের তুলনায় ১০৪ দশমিক ৯ টন কম। ২০২৩ সালে ইলিশ আহরণ হয়েছে মাত্র ১১৬ মেট্রিক টন। এই বিষয়ে উপজেলা অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত মৎস কর্মকর্তা মো. মোতাছিম বিল্লাহ্ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মূলত ইলিশসহ অন্যান্য মাছ সাগরে কম পাওয়া যাচ্ছে। আর বন্যায় হলে উপরের পানিগুলো নিচের স্তরে আসে তখন স্যালানেটি কমে যায় ও প্যারামিটার আপডাউন হয়। বর্তমান সরকার খুব আন্তরিক আশা করছি খুব শীঘ্রই ইলিশসহ অন্যান্য মাছের উৎপাদন বাড়বে।