বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৪২ পূর্বাহ্ন

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক মহীউদ্দীনকে নিয়ে ষড়যন্ত্র

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক মহীউদ্দীনকে নিয়ে ষড়যন্ত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা : সরকার নিয়ন্ত্রিত দেশের একমাত্র বৃহৎ দ্বীনি প্রতিষ্ঠান ইসলামিক ফাউন্ডেশন কে কব্জায় নিতে জামাত-বি.এন.পি’র তৎপরতা শুরু থেকেই লক্ষ্য করা যায়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইসলামের সঠিক প্রচার ও প্রসারে রক্ষ্য ১৯৭৫ সালে ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের পর স্বাধীনতা বিরোধী জামাতচক্র এ প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে।

কারণ ইসলামিক ভেশন সরকার নিয়ন্ত্রিত দেশের একমাত্র বৃহৎ দ্বীনি প্রতিষ্ঠান। দেশের লক্ষ লক্ষ আলেম-ওলামা এ প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের সাথে জড়িত। ৭৫ এর পর থেকে ৯৬ পর্যন্ত সরকার নিয়ন্ত্রিত এই দ্বীনি প্রতিষ্ঠানকে জামাতিরা তাদের দলীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে। ১৯৭৫-১৯৯৫ পর্যন্ত এই ২১ বছরে এই দ্বীনি প্রতিষ্ঠানে পরিকল্পিতভাবে জামাত ও বিএনপি প্রতিষ্ঠানের ৮০% জনবল জামাত ও বি.এনপি’ সমর্থিত। ঘরাণার ব্যক্তিবর্গ নিয়োগ লাভ করে। কার্যত এ প্রতিষ্ঠান জামাত ও বিএনপি’র প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। বর্তমানে এ ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে জয়লাভ করে বর্তমান সরকার ১ম বার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর এ প্রতিষ্ঠানকে সঠিক ধারায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়, এবং জামাতিদের রাস টেনে ধরার চেস্টা করা হয় কিন্তু চতুর জামাত অনুসারীরা রাতারাতি সরকার সমর্থক বনে যায়।

ফলে সরকারের শুদ্ধি অভিযান বাধা গ্রস্ত হয়। পরবর্তীতে ২০০১ সালে জামাত ও বি.এনপি সমর্থিত জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর জামাতীদের অশুভ তৎপরতা আবার বেড়ে যায় এবং পুরো ইসলামিক ফাউন্ডেশন জামাতিদের একক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। নিগৃহীত করা হয় বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের, দূরবর্তি স্থানে বদলী করা হয়, শোকজ ও বিভাগীয় মামলা করে হয়রানি ও নির্যাতন করা হয়, অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকুরীচ্যুত করা হয়। এভাবে ইসলামিক ফাউন্ডেশন এ জামাতের রাম-রাজত্ব কায়েম করা হয়।

পরবর্তীতে ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামীলীগ জয়লাভ করার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার গঠন করলে পুনরায় জামাত-বি.এন.পি অনুসারীরা সরকার সমর্থক বনে যায়, তারা নিজেদের বাঁচাতে মরিয়া হয়ে সরকারের মন্ত্রী, এমপি, আওয়ামীলীগ নেতাদের সুপারিশে নিজেদের রক্ষায় সফল হয়ে যায়। এতে তারা তাদের অবস্থান পাকা-পোক্ত করে ঢালাওভাবে সরকার সমর্থক কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ, অপ-প্রচার করে চরিত্র হনন, তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন ও তাদেরকে প্রশ্নবিদ্ধ করে অত্যান্ত সু-চতুরভাবে নিজেদের অবস্থান পাকা-পোক্ত করে ফেলে। বর্তমানে ইসলামিক ফাউন্ডেশনে কর্মরত জামাতীরা সরকার সমর্থক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের (সাবেক ছাত্রলীগ নেতা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান) বিরুদ্ধে সুপরিকল্পিতভাবে মিথ্যা অভিযোগ, অপ-প্রচার, মিথ্যাচার, কল্পিত দুর্নীতির অভিযোগ সম্বলিত মিথ্যা, বানোয়াট উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদ টাকার বিনময়ে নিম্ন শ্রেণীর সংবাদপত্রে প্রচার করে সরকার সমর্থিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশ্নবিদ্ধ করে ইসলামিক ফাউন্ডেশনে তাদের কোনঠাসা করার ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত শুরু করেছে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন জামাতি কর্মকর্তাদের সহায়তায় তারা এ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।

মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ, সুপরিকল্পিতভাবে চরিত্র হনন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদ পরিবেশন করে মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন জামাতি কর্মকর্তাদের সহায়তায় অত্যান্ত সুপরিকল্পিতভাবে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা,বঙ্গবন্ধু পরিষদ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আহ্ববায়ক জনাব মহীউদ্দীন মজুমদারকে বায়তুল মুকাররম মসজিদ-মার্কেটের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়ে তাদের অবস্থান পাকা-পোক্ত করেছে। বর্তমানে বায়তুল মুকাররম কমপ্লেক্স জামাতবি.এন.পির অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। আগাঁরগাওস্থ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে জামাত বি.এন.পি’র অনুসারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদায়ন করা হয়েছে পরিকল্পনার অংশ হিসেবে।

অন্যদিকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সরকার সমর্থক কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত, সাবেক ছাত্র নেতা আবু বকর সিদ্দিক, মোঃ মুস্তাফিজুর রহমান, মজিবউল্লাহ ফরহাদ, সাইফুল ইসলাম, রিজাউল করিম, মশিউর রহমান ভূইয়া, মহিউদ্দীন পাটোয়ারী, জাহাঙ্গীর আলম, সুজন আহম্মেদ চৌধুরী, মোঃ জাকের হোসাইন প্রমুখ কর্মকর্তাদের অত্যান্ত কম গুরুত্বপূর্ন পদে পদায়ন করে অপমান-অপদস্ত করা হচ্ছে। সরকার সমর্থক অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ঢাকার বাহিরে দূরবর্তীস্থানে বদলী করা হয়েছে। জামাত-বি.এন.পি’র সমর্থক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রধান কার্যালয় ও ঢাকার আশে-পাশের গুরুত্বপূর্ন জেলাগুলোতে পদায়ন করা হয়েছে। জামাত-বি.এন.পি’র সমর্থক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি দেয়া হয়েছে,পক্ষান্তরে সরকার সমর্থক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বঞ্চিত করা হয়েছে। কাদের পরামর্শে, কাদের ইংগিতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনে জামাত-বি.এন.পি’র রাম-রাজত্ব করা হচ্ছে অবিলম্বে চিহ্নিতপূর্বক ব্যবস্থাগ্রহণ করতে হবে।

আগামী নির্বাচনকে ঘিরে জামাত-বি.এন.পি’র নীল নকশা; সরকার সমর্থক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে তাদের চরিত্রহনন ও তাদেরকে কর্তৃপক্ষের নিকট প্রশ্নবিদ্ধ এবং বিতর্কিত করে দূরে ঠেলে দিয়ে তাদের মূল লক্ষ্য : ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে করায়ত্ব করে সারাদেশের আলেম-ওলামাদের নেতৃত্ব জামাতিদের হাতে নেওয়ার অশুভ তৎপরতা রুখে দিতে হবে,ষড়যন্ত্রকারী-চক্রান্তকারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনে কর্মরত সাবেক শিবির ক্যাডার পরিচালক তৌহিদুল আনোয়ার কর্তৃক প্রতিনিয়ত প্রধানমন্ত্রীর চরিত্রহনন,সরকারের বিরুপ-সমালোচনা ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনে কর্মরত জামাত-বি.এন.পি’র কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে অস্থিরতা ও অরাজকতা সৃষ্টির পায়তারা নস্যাৎ করার নিমিত্বে তাকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে এবং তার সাথে সংশ্লিষ্ঠ ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনে কোন অপশক্তি যাতে অস্থিরতা-অরাজকতা সৃষ্টি করে ফায়দা হাসিল করার সুযোগ না পায় সে জন্য অবিলম্বে প্রয়োজনীয় কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |