বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় সুমাইয়া আক্তার (৩২) রহস্যজনকভাবে নিহত হয়েছেন। তাঁর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশের বক্তব্যে অসঙ্গতি দেখা দিয়েছে। একদিকে পুলিশ বলছে আত্মহত্যা, অন্যদিকে পরিবারের দাবি এটি পরিকল্পিত হত্যা।
২৫ জুন সকালে আড়িয়া ইউনিয়নের রহিমাবাদ শালুকগাড়ি গ্রামের পুকুরপাড় এলাকায় ওয়াহেদ আলীর ভাড়া বাসার একটি ঘর থেকে সুমাইয়ার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সুরতহাল প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গলায় অর্ধচন্দ্রাকৃতির দাগ, চোখ ফোলা এবং মুখে তরল পদার্থ বের হওয়ার কথা। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, মরদেহের পরনে থাকা জামায় রক্ত ছিল এবং পেটিকোট উল্টোভাবে পরা ছিল, যা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি।
পুলিশের সুরতহালের স্বাক্ষী মোঃ ইমন(২৭) বলেন, লাশ উদ্ধারের সময় পুলিশের সাথে আমি সেদিন শুরু থেকেই ছিলাম। লাশ নামানোর কাজে পুলিশকে সহযোগিতা করেছি। শুরু থেকে শেষ অবধি আমি এবং আরো কয়েকজন মোবাইল ফোনে তা ধারণ করেছি।
স্থানীয় ইমনসহ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ঘরের ভেতরের দরজা ভেতর থেকে সিটকিনি আটকানো ছিল। কিন্তু ঘরে এমন কিছু পাওয়া যায়নি, যার ওপর দাঁড়িয়ে আত্মহত্যা করা সম্ভব। লাশের পড়নে ডোরাকাটা সেমিজ ধরণের হাতাকাটা গেঞ্জি ছিলো আর নীল রঙের পেটিকোট ছিলো। গেঞ্জির বুকের অংশে অনেকটা জায়গা জুড়ে রক্ত ছিলো এবং পেটিকোট উল্টো করে পড়া ছিলো (ফিতা বাঁধার অংশ কোমড়ের পিছনে বাঁধা ছিলো)। ২হাত ছড়ানো ছিলো যা অনেকাংশ সুরতহাল রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় নাই এতে রহস্য আরও ঘনীভূত হয়েছে।
এদিকে নিহতের পরিবার অভিযোগ করেছে, সুমাইয়ার স্বামী রাজু ও তাঁর সহযোগীরা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। তারা আরও দাবি করে, সুরতহালে প্রকৃত তথ্য গোপন করে পুলিশ তদন্তকে ভিন্নখাতে নেয়ার চেষ্টা করছে।
জানতে চাইলে এই ঘটনার তদন্ত কর্মকর্তা আই ও শাজাহানপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাসেল আহমেদ জানান, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে গলায় রশি পেঁচিয়ে আত্মহত্যার বিষয়টি পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় থানায় কোনো অপমৃত্যু মামলা হয়নি, তবে নিহতের ভাই একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।এখন অবধি নিহতের পরিবার আমাদের সাথে এ বিষয়ে আর যোগাযোগ করে নাই।
আরো জানা যায় লাশ উদ্ধারের এক সপ্তাহ আগে অজ্ঞাত কেউ ওই ভাড়া বাসায় ঢুকে একটি ঘরের জিনিসপত্র এলোমেলো করলেও যেখানে মরদেহ উদ্ধার করা হয় সেই ঘরটি পরিপাটি করা ছিল।
আপনার মতামত লিখুন :