এ কে এম মাহমুদ রিয়াজ , লক্ষ্মীপুর : লক্ষ্মীপুর কমলনগর উপজেলার চরকাদিররা ইউনিয়নের কাজী আব্দুর রহমান এক যুগ যাবৎ মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন।অনুসন্ধানে জানা যায়, চর কাদিরা ইউনিয়নে নিয়োগ প্রাপ্ত কাজী আব্দুর রহমান এর বাড়ি ৭ নং হাজিহাট ইউনিয়নের লরেন্সবাজার সংলগ্ন ২ নং ওয়ার্ডের জাঙ্গালিয়া গ্রামে।
গত ১০ নভেম্বর ২০১৩ ইং সালে ভূয়া জম্মনিবন্ধন,প্রতারণা ও জালজালিয়াতি করে বাড়ি নির্মানের আগে ৪০৬ নং হোল্ডিংএ স্থায়ী বাসিন্দা দেখিয়ে আইন মন্ত্রণালয় থেকে নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজী) হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন । স্থায়ী বাসিন্দা না হওয়া সত্ত্বেও কাজী নিয়োগ হওয়ায় তোরাবগঞ্জ ইউনিয়নের চরপাগলা গ্রামের মফিজ উল্যার ছেলে মো: মোসলেহ উদ্দিন চরকাদিরা ইউনিয়নের অস্থায়ী বাসিন্দা অবৈধ ভুয়া কাজী আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট চ্যালেনঞ্জ করে একটি পিটিশন দায়ের করেন।যাহার রীট পিটিশন নং ৪২০৮/২০১৪।
বিচারপতি সালমা মাসু চৌধুরী, মো: হাবিবুল গনি তিন মাসের জন্য কাজী আব্দুর রহমানের নিকাহ রেজিস্ট্রার নিয়োগ স্থগিত করেন। গত ২৬ আগষ্ট ২০১৪ সালে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ, এবং আবু তাহের মোঃ সাইফুর রহমান হাইকোর্ট বেঞ্চের আদালত আবদুর রহমানের কাজীর নিয়োগ স্থগিতাদেশ মেয়াদ রুল নিষ্পত্তি হওয়া পযর্ন্ত বর্ধিত করার আদেশ দেয়া হয়।
মহামান্য হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রায় ১২ বছর যাবত অবৈধভাবে চার সহস্রাধিক বিয়ে, তালাক, এবং দেশ বিদেশে ম্যারিজ সার্টিফিকেট প্রদান করে আসছে আবদুর রহমান। অন্যদিকে হাইকোর্টের স্ট্রে আদেশ থাকা সত্বে ও আব্দুর রহমান ইনডেন্ট এর মাধ্যমে সরকারিভাবে নিয়মিত সকল ইকুইপমেন্টগুলো জেলা রেজিস্টার কার্যালয়ের যোগসাজশে জিরো থেকে হিরো বনে যান ।একদিকে হাইকোর্টের স্ট্রে অর্ডার অন্যদিকে জেলার রেজিস্টার কার্যালযের মাধ্যমে চাহিদা মেটানো হতো বিষয়টি রীতিমত অবাক করার মত।
কমলনগর উপজেলার৭ নং হাজীর হাট ইউনিয়নের কাজী এবিএম বেলাল হোসাইন গত ৩১ জুলাই ২০২৪ তারিখে স্বেচ্ছায় -অবসর গ্রহন করায় হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা চলমান অবস্থায় তড়িঘড়ি করে মোটা অংকের উৎকোচ গ্রহনের মাধ্যমে শূন্য কোটায় ১২০ দিনের জন্য গত ২৯ জুন ২০২৫ ইংতারিখে নিকটতম পার্শ্ববর্তী হাজীর হাট ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার আবদুর রহমানকে অতিরিক্ত কাজীর দায়িত্ব প্রদান করেন লক্ষ্মীপুর জেলা রেজিস্ট্রার সাবিকুন নাহার। ৩০ জুন লক্ষ্মীপুর জেলা রেজিস্ট্রার সাবিকুন নাহার চাকুরী থেকে অবসর গ্রহন করে চলে যান।
কাজি নিয়োগ বদলি অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া এ যেন জেলার রেজিস্টার অফিসের আরেক বাণিজ্য। হাজীর হাট ইউনিয়নের অতিরিক্ত কাজীর দায়িত্ব দেয়া নিকাহ রেজিস্ট্রার নিয়োগের আদেশটি বাতিলে দাবিতে গত ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ লক্ষ্মীপুর জেলা রেজিস্ট্রার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ৩ নং চর লরেন্স ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার মো:আব্দুল লতিফ।
অভিযুক্ত আবদুর রহমান, জানান আমার স্থায়ী ঠিকানা হাজির হাট ইউনিয়নে হলেও ২০০৬ সালের আগে কোন জম্মনিবন্ধন সরকার করে নাই, বতমানে চরকাদিরা ইউনিয়নে অনলাইনের মাধ্যমে জম্মনিবন্ধন সনদ নিয়েছি। হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে দীর্ঘ এক যুগে ৪ হাজার বিয়ে কিভাবে রেজিস্ট্রার করেছেন। জবাবে আব্দুর রহমান বলেন, হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার কোন নোটিশ আমি হাতে পায়নি। লক্ষ্মীপুর জেলা রেজিস্ট্রার মো. সালাহ উদ্দিন বলেন, 'কাজী আব্দুর রহমানের বিষয় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।লক্ষ্মীপুর জেলা রেজিস্টার কার্যালয়ও কাজীদের বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে আসছি আগামী সংখ্যায় চোখ রাখুন তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করুন।
আপনার মতামত লিখুন :