মোস্তফা সারোয়ার: বাংলাদেশের রাষ্ট্রয়াত্ব প্রতিষ্ঠান যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডে জালানী তেল চুরির ঘটনা নতুন কিছু নয়। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন অধীনস্থ এই প্রতিষ্ঠানটিতে গড়ে তুলেছে তেল পাচারের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট৷ বিগত ফ্যাসিষ্ট সরকার আমলের শুরু থেকে অদ্যবধি একই গ্রুপের নেতৃত্বে আছে তেল চুরির সিন্ডিকেটটি। অভিযোগ আছে উঠেছে এই সিন্ডিকেটটির নেতৃত্বে এজিএম অপারেশন ডিপো শেখ জাহিদ আহমেদ , যমুনা অয়েল শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও নিষিদ্ধ সংগঠন জাতীয় শ্রমিক লীগ চট্টগ্রাম মহানগরীর আহবায়ক মুহাম্মদ এয়াকুব। তাদের আশ্রয় প্রশয় দেয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির জিএম এইচ আর মো: মাসুদুল ইসলামের বিরুদ্বে। বিভিন্ন ডিপো হতে তেল পাচারে এই সিন্ডিকেটটি একেক সময় একেক কৌশল বের করে। বলা চলে বরাবরই তেল চুরির নিত্য নতুন পন্থা বের করে এই সিন্ডিকেট সদস্যরা । সম্প্রতি ফতুল্লা ডিপোতে পৌনে চার লাখ লিটার ডিজেল গায়েব হয়েছে। এনিয়ে চলছে জালানী খাতে তোলপাড়। গঠন করা হয়েছে একাধিক তদন্ত কমিটি তদন্তের সময় সীমা পার হলেও এখনো তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়নি কোন কমিটিই।
শেখ জাহিদ সমাচার
এজিএম অপারেশন ডিপো (সকল ডিপো গুলোর ইনচার্জ) ফতুল্লা ডিপোতে সম্প্রতি ডিজেল গায়েব হওয়ার ঘটনার সাথে সরকারি জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে শেখ মাহমুদ জাহিদোর বিরুদ্বে। এই ঘটনায় শেখ জাহিদ আহমেদ সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার কথা, কিন্তু উল্টো দেয়া হয়েছে তাকে পদোন্নতি । এছাড়া এই ঘটনায় যমুনা অয়েলের তদন্ত কমিটিতেও তাকে অন্তভুক্ত করা হয়৷ ৯ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সিন্ডিকেট প্রধান জিএম এইচ আর মাসুদুল ইসলামের স্বাক্ষরিত শেখ জাহিদ আহমেদকে এজিএম অপারেশন (ডিপোর) পাশাপাশি এজিএম ( এস এন্ড ডি) অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়। সেনাবাহিনী হতে চাকুরীচ্যুত জাহিদ আহমেদকে অবৈধ ভাবে প্রতিষ্ঠানটিতে চাকরি দেয়া হয়৷ ২০১১ সালের ফ্যাসিস্ট সরকারের এক প্রভাবশালী মন্ত্রীর সুপারিশে টার্মিনাল সিকিউরিটি ইনচার্জ হিসাবে তিনি যোগদান করেন। ২০১৪ সালে টার্মিনাল এ ১১ নং ষ্টোরেজ ট্যাংকে আগুন লাগার বিষয়ে তদন্ত কমিটি জাহিদ আহমেদের বিরুদ্ধে দায়িত্ব অবহেলা ও গাফিলতির প্রমাণ পায়। স্থগিত করা হয় দুই বছরের জন্য তার ইনক্রিমেন্ট। পরবর্তীতে তাকে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে উল্টো পদায়ন করা হয় রাজশাহী ডিপোর বিক্রয় কর্মকর্তা হিসেবে। সিকিউরিটি ইনচার্জ থেকে বিক্রয় কর্মকর্তা, প্রতিষ্ঠানটির নিয়মে নেই, কিন্তু শেখ জাহিদ আহমেদের বেলায়, সেটাই হয়েছে । এখানেই থেমে নেই, পরবর্তীতে পদোন্নতি পেয়ে নাটোর, ফতুল্লার মতো গুরুত্বপূর্ণ ডিপো ইনচার্জ হিসাবে দায়িত্ব পালন করছে৷ ফতুল্লা থাকাকালীন সময়ে শামীম ওসমানের ভাতিজা আজমীর ওসমানের ডানহাত হিসাবে পরিচিতি পায় এই শেখ জাহিদ আহমেদ । এমন কোন অপকর্ম নেই, ফতুল্লা ডিপোতে তিনি করে যায়নি৷ তার দায়িত্ব থাকাকালীন তেল চুরির মহা উৎস চলেছে, ফতুল্লা ডিপোতে। যা বর্তমানেও বলবৎ আছে । এদিকে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান চিকিৎসক ডা: উত্তম বড়ুয়া কর্তৃক একাধিকবার তাকে মানষিক ভাবে অপ্রতিষম্য (মেন্টালি ডিস অর্ডার) প্রত্যায়ন পত্র প্রদান করেছে।
ক্ষমতাধর মাসুদুল ইসলাম
সম্প্রতি ফতুল্লা ডিপোতে ডিজেল গায়েব হওয়ার ঘটনা ধামাচাপা দিতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচেছ বর্তমান সময়ে যমুনা অয়েলের সবচেয়ে ক্ষমতাধর কর্মকর্তা মো : মাসুদুল ইসলাম। তদন্ত কমিটিতে বিভিন্ন ভাবে প্রবাভিত করা চেষ্টা চলে। তিনি স্বপ্ন দেখছেন আগামীতে প্রতিষ্ঠানটি ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদটি বাগিয়ে নেয়ার । দীর্ঘ সতের বছর ধরে চতুর মো: মাসুদুল ইসলাম প্রতিষ্ঠানটিতে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছে। বর্তমান সময়েও ক্ষমতার হেরফের ঘটেনি। তবে ৫ আগষ্ট ২০২৪ দেশের পটপরিবর্তনের পর ক্ষমতা আগের চেয়ে দ্বিগুণ বেড়েছে। বর্তমানে তিনি একই সাথে মহাব্যবস্থাপক মানবসম্পদ, মহাব্যবস্থাপক বিপনন এবং কোম্পানি সচিবের দায়িত্ব পালন করছে। যদিও মার্কেটিং কিংবা হিউম্যান রির্সোস ম্যানেজমেন্টের উপর কোন ডিগ্রী নাই৷ সিম্পল বিকম তৃতীয় শ্রেনী পাস ( সি, সি, অর্থাৎ কোর্স কমপ্লিট )। অথচ যমুনা অয়েলের প্রধান কার্যালয়ে আছে তার পৃথক পৃথক তিনটি চেম্বার। অফিসারদের চেম্বার বন্টনের দায়িত্বেও তিনি । বর্তমান সময়েও সেই ফ্যাসিষ্ট সরকারের দোসর মাসুদুল ইসলামের ইশারায় চলছে যমুনা ওয়েলের সকল কর্মকাণ্ড । পরিচালনা বোর্ডের কেউ নয়, তবে তিনিই সকল ডিপোর নিয়ন্ত্রক। যদিও ২০১৬ সালে যমুনা ওয়েল কর্তৃপক্ষের একটি তদন্ত প্রতিবেদনে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ প্রমানিত হয়েছে । তবে বিভাগীয় ব্যবস্থাতো নেয়নি , উল্টো তাকে দেয়া হয়েছে পদোন্নতি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে ৫ আগষ্ট ২০২৪ সাল থেকে অদ্যবধি অফিসে অনুপস্থিত প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত সিবিএ নেতা মুহাম্মদ এয়াকুব ও নারায়নগঞ্জের ফতুল্লা ডিপোর আরেক সিবিএ নেতা জয়নাল আবেদীন টুটুল। কোনো কর্মকর্তা কিংবা কর্মচারী অফিসে উপস্থিত কিংবা অনুপস্থিতির বিষয়টি দেখভালের দায়িত্ব জিএম এইচ আর সেকশনের। কিন্তু খোদ জিএম এইচ আর মাসুদুল ইসলামের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ সহযোগিতায় নিয়মিত হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর চলছে অফিসে অনুপস্থিত এই দুই সিবিএ নেতার। এদিকে যমুনা অয়েল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আবুল হোসেনকে ২০ জুলাই ২০২৫ নগরীর ইপিজেড থানার সিমেন্ট ক্রসিং এলাকা থেকে ইপিজেড থানা পুলিশ গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতের বিরুদ্বে অভিযোগ রয়েছে থানা ভাংচুরসহ একাধিক নাশকতার ৷ অথচ মজার বিষয় হলো ৯ আগষ্ট পর্যন্ত আবুল হোসেনকে অফিসে হাজিরা দেখানো হয়েছে । তার গ্রেফতারের বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলেও ২০ জুলাই থেকে ৯ আগষ্ট পর্যন্ত অর্থাৎ এই বিশ দিনের বিষয়ে অফিসিয়াল ভাবে কিছুই বলা হয়নি । এরপরও তিন মাস ধরে অফিসিয়ালি অনুপস্থিত সিবিএ নেতা আবুল হোসেন , কিন্তু এবিষয়ে কোন ব্যবস্থা নিচেছনা জিএম এইচ আর মো: মাসুদুল ইসলাম।
অনুসন্ধানে জানা গেছে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হলেও যমুনা ওয়েলে ক্ষমতার একটুও ভাটা পড়েনি ফ্যাসিস্ট দোসর মাসুদুল ইসলামের । বরং ফ্যাসিস্ট দোসরদের ভালো জায়গায় পোষ্টিং ও পদোন্নতি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে৷ কোন নীতিমালা ও বিভাগীয় প্রধানদের সুপারিশ তোয়াক্কা না করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে পাঁচ জনকে পদোন্নতি দেয় জিএম এইচ আর মাসুদুল ইসলাম৷ এদিকে পদোন্নতি পাওয়া সকলেই আবার ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরও বটে । যমুনা অয়েল সুত্রে জানা গেছে ২০২৫ সালের ৩১ আগষ্ট মাসুদুল ইসলামের স্বাক্ষরিত পদোন্নতি প্রাপ্ত তালিকাদের মধ্যে অন্যতম হলো কুতুবউদ্দিন হোসেন৷ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা থেকে জুনিয়র অফিসার পদে পদোন্নতি পাওয়া এই কুতুবউদ্দিন হলো নিষিদ্ধ সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামিলীগ চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক, সাবেক মেয়র আজম নাসিরের চাচাতো ভাই । বিগত ফ্যাসিষ্ট সরকারের আমলে আজম নাসিরের হাত ধরেই তার চাকরীতে যোগদান। তবে চাকরিতে যোগ দেয়ার পর থেকেই অফিসের কোন শৃঙ্খলা তোয়াক্কা করতোনা। ইচ্ছে হলে অফিসে আসতো, ইচেছ না হলে আসতোনা৷ আবার অনেক সময় অফিসে গরহাজিরার কারনে তার বেতন কর্তন করার প্রমাণও রয়েছে । তার এহেন কর্মকাণ্ডের জন্য একবার খুলনা বিভাগীয় অফিসে বদলী করা হলেও আজম নাসিরের ক্ষমতার দাপটে সেই বদলি স্থগিত হয়ে যায়৷ কিন্তু বিতর্কিত এই কর্মচারীকে নিজের ইচেছমতো পদোন্নতি দিয়েছে জিএম এইচ আর মাসুদুলু ইসলাম। দ্বিতীয় পদোন্নতির তালিকায় আছে মো: সহীদুল আলম, তাকেও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা থেকে জুনিয়র অফিসার পদে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে । তার চাকরি হয়েছে ফ্যাসিস্ট সরকারের আলমে, তাও আবার রাউজানের সাবেক এমপি ফজলে করিম চৌধুরীর আর্শীবাদে। এছাড়া সহীদুল আলম ছিল ছাত্রলীগের সাবেক দুর্ধর্ষ ক্যাডার ও রাউজান ডিগ্রি কলেজ ছাত্র সংসদের ছাত্রলীগের মনোনীত সাবেক ভিপি । বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে একদিনের জন্যও অফিসে যেতে হয়নি তাকে। কিন্তু এবার তাকে দেয়া হয়েছে পদোন্নতি । পদোন্নতির তালিকায় আরও আছে ছাত্রলীগের ক্যাডার শেখ কামাল, ইকরাম ও মীর আরিফ। তাদের প্রত্যেককে কেরানি থেকে জুনিয়র অফিসার পদোন্নতি দেয়া হয়েছে ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড শ্রমিক অংশ গ্রহণ তহবিল ও কল্যান তহবিলের টাকা নয় ছয় করার অভিযোগ আছে মাসুদুল ইসলামের বিরুদ্ধে । যমুনা অয়েল সুত্রে জানা গেছে ২০১৪ সালের ১৫ মে ব্যবস্থাপনা প্রতিনিধি ও শ্রমিক কর্মচারীর প্রতিনিধির সমন্বয়ে এই তহবিল পরিচালনার জন্য অছি পরিষদ ( ট্রাষ্টি বোড) পুর্নগঠন করা হয় । চার সদস্য বিশিষ্ট অছি পরিষদ ( ট্রাষ্টি বোর্ডের) সদস্যদের মধ্যে ব্যবস্থাপনা প্রতিনিধির পক্ষে ছিল তৎকালীন এজিএম ( এজেন্সি চট্টগ্রাম) অফিস বর্তমান জিএম এইচ আর মাসুদুল ইসলাম ।ট্রাষ্টি বোডে শ্রম আইন ২০৬ ধারা ২৪০(১১) তে তহবিল বিনিয়োগের বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু সেই নিয়মনীতি অনুসরণ করা হয়নি। ২০১৫ সালের শেষ ভাগে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ অবগত হয়, উল্লেখিত ট্রাষ্টি বোর্ড শ্রমিক অংশীদারত্বের তহবিলের অধীন বিনিয়োগের অংশের সমস্ত বিনিয়োগযোগ্য টাকা ঝুকিপূর্ণ শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করেছে । এবিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে ব্যবস্থাপনা পরিচালক কর্তৃক ট্রাষ্টি বোর্ডকে অংশীদারত্ব তহবিলের অর্থ দ্বারা শেয়ার ক্রয় সংক্রান্ত বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রদান করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করে । কর্তৃপক্ষের নির্দেশনামতে ২০১৬ সালের ৫ জানুয়ারী ট্রাষ্টি বোর্ডের পক্ষে মো: মাসুদুল ইসলাম (সদস্য) এবং হাবীবুল মুহিত চেয়ারম্যান ট্রাষ্টি বোর্ড স্বাক্ষরিত একটি প্রতিবেদন দাখিল করে । তবে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের প্রাথমিক ধারণায় ট্রাষ্টি কর্তৃক স্বীয় সিদ্ধান্তে ঝুঁকিপুর্ন শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ আইনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রতীয়মান হয়নি । এদের প্রতিবেদন দাখিলের একদিন পরেই অর্থ্যাৎ ২০১৬ সালের ৬ জানুয়ারী কোম্পানির তিন সিনিয়র কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় । এই কমিটি তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয় ২০১৬ সালের ১১ ফেব্রুয়ারী । তদন্ত কমিটি রিপোর্টে পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশের গুলো মধ্যে ছিল বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ (২০১৩ সালে সংশোধিত) ধারা মতে অংশ গ্রহণ তহবিলের অর্থ সরকারি মালিকানাধীন বিনিয়োগযোগ্য কোন খাতে বিনিয়োগ করা যাবে, এটা উল্লেখ আছে। কিন্তু ট্রাষ্টি বোর্ড এর ব্যতয় ঘটেছে বলে প্রতীয়মান হয়। তদন্ত কমিটি মনে করে অংশীদারত্ব তহবিলের অর্থ প্রচলিত বিনিয়োগের বাহিরে শেয়ার বাজারের মতো ঝুকিপূর্ণ বাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ট্রাষ্টির সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত ছিল । তদন্ত রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের ফলে ২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারী পর্যন্ত সার্বিক ভাবে অংশীদারত্বের তহবিলের অর্থ ( লভাংশ সমন্বয়ের পর) নীট ক্ষতির পরিমাণ চার কোটি পনের লাখ বারো হাজার দুই শত টাকা । ট্রাষ্টি কোনো ভাবেই ক্ষতির দায় এড়াতে পারেন না। সর্বোপরি তদন্ত রিপোর্টে ট্রাষ্টি বোর্ডের সকল সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয় । কিন্তু ব্যবস্থা নেয়াতো দুরের কথা উল্টো মাসুদুল ইসলাম পদোন্নতি পেয়ে জিএম এইচ আর
অঘোষিত সম্রাট শ্রমিকলীগ নেতা এয়াকুব
শুরুটা ১৯৯৪ সাল, দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে অস্থায়ী পদে যমুনা অয়েল কোম্পানিতে চাকরি জীবন শুরু হয় মুহাম্মদ এয়াকুবের । তিন বছরের মাথায় ১৯৯৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে টাইপিষ্ট পদে তার চাকরি স্থায়ী হয়। পদ মর্যাদা তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী। কর্মস্থান যমুনা অয়েল প্রধান কার্যালয় আগ্রাবাদ চট্টগ্রাম । দীর্ঘ বছরের এই চাকরি জীবনে তার কোন বদলী নাই । অবশ্য একবার বগুড়া বদলী করা হলেও আদালতের আদেশে সেই বদলি আদেশ স্থগিত হয়ে যায়৷ বেতন বর্তমানে সর্বসাকুল্যে প্রায় ৩৪ হাজার টাকা, তবে মালিক হয়েছে শত কোটি টাকার । দামী গাড়ি, বাড়ি, ফ্ল্যাট, ব্যাংক ব্যালেন্সে সবকিছুই হয়েছে এই চাকরি জীবনে । সেলারী এ্যাকাউন্টে পৌনে চার কোটি টাকা লেনদেন হওয়ায় ব্যাংক এশিয়া তার হিসাবটিকেও সন্দেহজনক অস্বাভাবিক লেনদেন ( এসটিআর) হিসাবে চিহ্নিত করেছে । ২০১৪:সালে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন তার জ্ঞাত আয় বহি ভুত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তদন্তে নেমেছিল । করা হয়েছিল তদন্ত কমিটও, তবে সেই তদন্ত কমিটির তদন্ত রিপোর্ট অদ্যবধি আলোর মুখ দেখেনি । ২০২২ সালের মাঝামাঝিতে এই এয়াকুবের অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক৷ অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রাথমিক সততাও পেয়েছে দুদক ।
গত টানা সাড়ে ষোল বছর ধরে সিবিএ নেতা মুহাম্মদ এয়াকুবের নেতৃত্বেই চলছে যমুনা ওয়েলের যতসব অপকর্ম।একদিকে চট্টগ্রাম মহানগর জাতীয় শ্রমিকলীগের আহবায়ক, অন্যদিকে যমুনা অয়েল কোম্পানির লেবার ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক। । জাতীয় শ্রমিকলীগের অন্তর্ভুক্ত এই সিবিএ সংগঠনটির ভোটার বিহীন তিন টার্মের সাধারণ সম্পাদকও বটে । এছাড়া গ্যাস এন্ড অয়েলস ফেডারেশনের মহাসচিবেরও দায়িত্ব সামলিয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের পুরোটা সময়ে এই সিবিএ নেতা মুহাম্মদ এয়াকুবের কথাই চলছে প্রতিষ্ঠানটির সকল কার্যক্রম । বলা চলে তার মুখের কথাই ছিল প্রতিষ্ঠানটির অঘোষিত আইন। তার বাইরে গিয়ে খোদ প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকও কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি । দীর্ঘ সাড়ে ষোল বছরে, সকল কর্মকর্তা / কর্মচারী নিয়োগ, পদোন্নতি, ক্যাজুয়াল ও কন্ট্রাক্টর ক্যাজুয়েল নিয়োগ , কোম্পানির মেডিকেল শাখার ঔষধ ক্রয়, টেন্ডার , ক্যান্টিনের বাজার, অয়েল ট্যাংকার, ট্যাংকলরী সব কিছুরই নিয়ন্ত্রণ হয়েছে তার ঈশারায় । এসব ক্ষেত্রে মুহাম্মদ এয়াকুবকে নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন দেয়া ছাড়া নুন্যতম কোনো সিদ্ধান্তও নেয়ার ক্ষমতা ছিলনা যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড কর্তৃপক্ষের। পাশাপাশি ফার্নেস অযেল, বিটুমিন ও জালানি তেল চুরির সিন্ডিকেটতো ছিল তার নিজস্ব তত্বাবধানেই। দেশের সবকটি যমুনা ওয়েলের ডিপোগুলো নিয়ন্ত্রণ রাখতে চাকরি দেয়া হয়েছে মুহাম্মদ এয়াকুবের নুন্যতম বিশজন আত্মীয়কে। এদের তালিকায় রয়েছে আপন ছোট ভাই পারবতীপুর ডিপোর অপারেটর কাজী আইয়ুব, চাচাতো ভাইদের মধ্যে পতেঙ্গা ডিপাের অপারেটর কাজী মো: সাদেক, আগ্রাবাদ অফিসের সহকারী কাজী কামরুল, পিয়ন কাজী খোরশেদ, নেজাম উদ্দিন ও চাঁদপুর ডিপোর অপারেটর মো, সায়েম। ফুফাতো ভাইদের তালিকায় রয়েছে আগ্রাবাদ অফিসের সকারী সৈয়দ মো: সিরাজ ও পতেঙ্গা ডিপোর সিকিউরিটি মো: আরিফ। ভাগিনাদের তালিকায় আছে সিলেট ডিপোর অপারেটর কাজী মোজাম্মেল, আগ্রাবাদ অফিসে সহকারী কাজী মুয়াদ, পতেঙ্গা অফিসের অপারেটর মো : হানিফ । খালাতো ভাইদের তালিকায় শ্রীমঙ্গল ডিপোর অপারেটর খোরশেদ আলম মিন্টু , ও মাহবুল আলম । শ্যালকের তালিকায় আছে চাঁদপুর ডিপোর অপারেটর মাইন উদ্দিন আহমেদ ছোটন । ভাতিজার তালিকায় আছে আগ্রাবাদ অফিসের ড্রাইভার মো: মাসুদ। ভগ্নিপতি ফারুক চাকরি করছে ফতুল্লা ডিপোর অপারেটর পদে। দৌলতপুর ডিপোর অপারেটর মো : দেলোয়ার হলেন তার নিকটতম আত্মীয় । এদের মধ্যে আগ্রাবাদ অফিসের পিয়ন ও অফিস সহকারী কাজী খোরশেদ ও কাজী কামরুল ছাড়া সকলেই অস্থায়ী ভিত্তিতে চাকরি করছে ।
পুরো প্রতিষ্ঠানটি নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে সকল ডিপোতে চাকরি দেয়া হয়েছে মুহাম্মদ এয়াকুবের আত্মীয় স্বজনকে। গতবছর জুলাই মাসে এয়াকুবের সহোদর পার্বতীপুর ডিপোর অপারেটর কাজী আইয়ুবের নেতৃত্বে ছয় কোটি কোটি টাকার তেল চুরির অভিযোগ উঠে । সেই ঘটনায় বিপিসি ও যমুনা তদন্তে নামে। গঠন করা হয় যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি ৷ তদন্তে কাজী আইয়ুবের বিরুদ্ধে তেল চুরির ঘটনার সততাও পেয়েছে। তবে কিছুই হয়নি আইয়ুবের বিরুদ্ধে, বড় ভাই এয়াকুবের ক্ষমতার দাপটে সব কিছু ধামাচাপা পড়ে গেছে ।
তেল চুরির পাশাপাশি চাকরি দেয়ার নাম করে ২৯ লাখ ৪৭ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে সিবিএ নেতা মুহাম্মদ এয়াকুবের বিরুদ্ধে । যমুনা সুত্রে জানা গেছে ২০১৯ ঠিকাদারের শ্রমিক আবদুল নুর ও হাসান ফয়সালের সহযোগিতায় চাকরি দেয়ার নাম করে আট জনের কাছ থেকে উল্লেখিত পরিমাণ টাকা নিয়েছে মুহাম্মদ এয়াকুব৷ বিভিন্ন কুরিয়ার ও বিকাশের মাধ্যমে টাকা গুলো নেয়া হয় বলে জানা গেছে৷ টাকা গুলো লেনদেন করেছে বাঘাবাড়ি যমুনা অয়েল ডিপোতে কর্মরত তোতা মিয়া। চাকরি না হওয়ায় টাকা ফেরত চাইলে উল্টো তোতা মিয়াকে নানাভাবে ভয়ভীতি ও প্রান নাশের হুমকি প্রদান করে।। এব্যাপারে ইয়াকুব, আবদুল নুর ও হাসান বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ১৯লা জুলাই সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর থানায় তোতা মিয়া জিডি করে। জিডি নং ৮৬৯। পরবর্তীতে তোতা মিয়াকে যমুনা অয়েলের প্রধান কার্যালয়ে ডেকে এনে জোর প্রয়োগ করে এয়াকুবের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হয়। চাকরির নামে টাকা আত্মসাতের ঘটনা ছাড়াও যমুনা ওয়েলফেয়ার ফান্ডের বারো লাখ টাকা আত্মসাতেরও অভিযোগ রয়েছে মুহাম্মদ এয়াকুবের বিরুদ্ধে । নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক যমুনা ওয়েলের জনৈক জৈষ্ঠ সহকারী দৈনিক সবুজ বাংলাদেশকে বলেন প্রতিষ্ঠানটিতে এয়াকুব এতটাই প্রভাবশালী তার কথা মতো ২০২৩ সালে যমুনা অয়েল কর্তপক্ষ তাদের বেতন থেকে টাকা কেটে নিয়েছে । ওয়েল ফেয়ার ফান্ড থেকে টাকা ফেরত দেবে বলে প্রত্যেক কর্মচারীর বেতন থেকে এক হাজার করে টাকা কেটে নিয়েছে৷ অদ্যবধি টাকা ফেরত দেয়া হয়নি । টাকা নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছে যমুনা ওয়েলের একাধিক কর্মকর্তাও৷
অনুসন্ধানে জানা গেছে যমুনা অয়েলে চাকরি করে হঠাৎ জমিদার হয়ে উঠে মুহাম্মদ এয়াকুব ।চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা লালখান বাজার ৩৩ হাইলেভেল রোডে ( মানারাত ইদ্রিস প্যালেস) এ চার হাজার তিশশ বর্গফুটের ফ্ল্যাটটির মালিক মুহাম্মদ এয়াকুব৷ পরিবার পরিজন নিয়ে তিনি সেখানেই বসবাস করছে। বর্তমানে ফ্ল্যাটটির বাজার মুল্য সাড়ে তিন কোটি টাকা৷ আগ্রাবাদ এক্সেস রোডে তার স্ত্রীর নামে রয়েছে ছয় কাঠা জায়গা। সেখানে টিনশেড করে ঘর ভাড়া দিয়েছে৷ এই জমির বর্তমান মুল্য প্রায় দশ কোটি টাকা । এছাড়া পতেঙ্গার ডেইল পাড়ায় জমি, গ্রামের বাড়িতে কিনেছে ভিটে, পুকুর ও ঘানি জমি৷ নিজে চলার জন্য আছে আধুনিক মডেলের NoHA মাইক্রোবাস৷ জ্ঞাত আয় বহি ভুত সম্পদের অর্জনের খবরটি অনেক আগেই বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের উর্ধতন কর্মকর্তাদের কান পর্যন্ত পৌঁছেছে । তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালে বিপিসি সিবিএ সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ এয়াকুব ও সহ সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নানের বিষয়ে তদন্তে নামে। সেই বছরের ৯ জুন তৎকালীন বিপিসির সচিব দীপক চক্রবর্তীর স্বাক্ষরিত তদন্ত কমিটি করা হয়, এতে প্রধান করা হয় উপমহাব্যবস্থাপক এটিএম সেলিম প্রধানকে ( বর্তমানে তিনি প্রতিষ্ঠানটির জিএম), সময় বেধে দেয়া হয় ২৪ জুন ২০১৪'এর মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়ার । কিন্তু এক যুগ পার হতে চলছে আজও আলোর মুখ দেখেনি সেই তদন্ত রিপোর্ট।
এদিকে ২০২২ সালের ১৫'সেপ্টেম্বর দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম -১ সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধানী কর্মকর্তা জুয়েল মজুমদারের কার্যালয়ে মুহাম্মদ এয়াকুবের জ্ঞাত আয় বহি ভুত সম্পদ অর্জনের বিষয়ে গণশুনানি হয়েছে । প্রাথমিক ভাবে সততাও পেয়েছে দুদক৷এখনো তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলমান আছে দুদকের।
৫ আগষ্ট ২০২৪ সালে দেশের পটপরিবর্তন হলেও নুন্যতম পরিবর্তন হয়নি এয়াকুবের বেলায় । আগে ছিল ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর জাতীয় শ্রমিকলীগ নেতা ,বর্তমানে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের ছায়াতলে। ছাত্রজনতার উপর হামলার অভিযোগে চট্টগ্রাম মহানগরীর ডবলমুরি থানায় দুটো মামলা এজাহার ভুক্ত আসামি এই শ্রমিকলীগ নেতা মুহাম্মদ এয়াকুব। একটি মামলার বাদী মানিক নামে জনৈক ব্যক্তি মামলা নাম্বার ১৪ তারিখ ২০২৪ জালের ২০ নভেম্বর।
ধারা১৪৩/১৪৭/১৪৮/১৪৯/১০৯/৩২৩/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৫০৬ দ: বি। মোট আসামীর সংখ্যা ১০৮ জন এতে ৩৫ নাম্বার এজাহার ভুক্ত আসামি মুহামৃমদ এয়াকুব। একই দিন একই থানায় আরেকটি মামলা হয়েছে, মামলা নং ১৫, ধারা সেই আগের মতো। এই মামলার ৫২ নাম্বার এজাহার ভুক্ত আসামি মুহাম্মদ এয়াকুব। তারই সংগঠনের সিবিএ এর সভাপতি আবুল হোসেন দীর্ঘ দিন ধরে জেল হাজতে কিন্তু বহাল তবিয়তে সাধারণ সম্পাদক এয়াকুব। যদিও এয়াকুবের গ্রেফতারের দাবীতে মানববন্ধন হয়েছে একাধিক বার। ২০২৪ সালের ২রা অক্টোবর আগ্রাবাদ যমুনা ওয়েলের প্রধান কার্যালয়ে চট্টগ্রাম নাগরিক সচেতন ব্যানারে মানববন্ধনটা করা হয়েছে হয় এয়াকুবের বিরুদ্ধে। অবশ্য সেই মানববন্ধনে এয়াকুব অনুসারীরা হামলাও করেছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি এয়াকুবের বেলায়।
ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরেরা পুলিশের গ্রেফতার আতংকে লাপাত্তা কিন্তু চট্টগ্রামের প্রভাবশালী জাতীয় শ্রমিক লীগ নেতা প্রকাশ্যে বহাল তবিয়তে। শোনা যাচ্ছে চট্টগ্রাম মহানগরীর কতিপয় বিএনপির প্রভাবশালী নেতাদের ম্যানেজ করেই প্রকাশ্যে বহাল তবিয়তে এই এয়াকুব । এমনও অভিযোগ উঠেছে ইতিমধ্যে সে জাতীয় শ্রমিক দলের নেতা বনে গেছে । ২০২৪ সালের ২১ নভেম্বর জাতীয় শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতির বরাবর যমুনা অয়েল শাখার কমিটি অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হয়৷ এই আবেদন পত্রে স্বাক্ষর করে যমুনা অয়েল শাখার আহবায়ক আবুল কাশেম ও যুগ্ম আহবায়ক আবুল আজিজ, এতেও নাম আছে মুহাম্মদ এয়াকুবের। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো জাতীয় শ্রমিক লীগের অন্তর্ভুক্ত যমুনা অয়েল কোম্পানির লেবার ইউনিয়নকে জাতীয় শ্রমিক দলের অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন করেন মুহাম্মদ এয়াকুব, পরবর্তীতে শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আনোয়ার হোসেন তা অনুমোদনও করেছে । তবে এই অনুমোদনের ঘোর বিরোধিতা করেছে চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিক দলের সভাপতি এস এম নাজিম উদ্দীন । তিনি কোনো ভাবেই ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর মুহাম্মদ এয়াকুবকে দলে টেনে নিতে রাজি হচ্ছেনা। কিন্তু ইতিমধ্যে দলে ঢুকে গেছে মুহাম্মদ এয়াকুব।
আপনার মতামত লিখুন :