জামিয়া ইস্যুতে ডিসিকে বদলির কোটি টাকার মিশন, তদন্তে গোয়েন্দা সংস্থা

নিজস্ব সংবাদদাতা , প্রতিদিনের কাগজ

প্রকাশিত: ২৮ অক্টোবর, ২০২৫, ০৪:০৬ পিএম

ছবি- (কোলাজ) প্রতিদিনের কাগজ

ময়মনসিংহের জামিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষক–শিক্ষার্থী দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মফিদুল আলমকে বিব্রত করা এবং তাঁকে প্রত্যাহারের উদ্দেশ্যে কোটি টাকার লেনদেনের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছে।

স্থানীয় সূত্র ও প্রশাসনের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে, একটি দুর্নীতিবাজ চক্র, প্রতারক জমির দালাল এবং নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা ও জাতীয় পার্টি একজন বিতর্কিত নেতা এ ঘটনার সুযোগ নিয়ে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত প্রভাবিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

গোয়েন্দা সংস্থার প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে ময়মনসিংহ শহর ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সক্রিয়। তারা জেলার কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম ব্যবহার করে প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালাচ্ছে এবং স্থানীয় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে উস্কানি ছড়াচ্ছে।

সূত্রের দাবি, ভারত থেকে কয়েকজন নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নেতা এই চক্রকে অর্থ ও নির্দেশনা দিয়ে ঘটনাটিকে রাজনৈতিক রূপ দেওয়ার চেষ্টা করছে। তারা কিছু মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে অর্থের বিনিময়ে আন্দোলনে উস্কে দিচ্ছে, যাতে ডিসি মফিদুল আলমকে বদলির দাবিকে কেন্দ্র করে প্রশাসনকে চাপে ফেলা যায়।

গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্টদের নাম, ঠিকানা ও যোগাযোগের নেটওয়ার্ক শনাক্ত করছে। এরই মধ্যে কয়েকজন সন্দেহভাজনকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে একটি সূত্র।

জামিয়ার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, টাকার লেনদেন ও রাজনৈতিক প্রভাবে পরিচালিত এসব কর্মকাণ্ডের কারণে মাদ্রাসা ও প্রশাসনের মধ্যে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। এতে শিক্ষার পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিবি) এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ঘটনার পেছনে কারা আছে, তা চিহ্নিত করতে ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে। কারা উস্কানি দিচ্ছে, কারা টাকা বিলি করছে এবং কোথা থেকে অর্থ আসছে—সব তথ্য উদঘাটনে আমরা কাজ করছি। প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অর্থ ও প্রভাবের মাধ্যমে সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি এবং প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ গণতন্ত্র ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতার জন্য মারাত্মক হুমকি। তাই ঘটনাটির স্বচ্ছ তদন্ত ও দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ময়মনসিংহবাসী।

Link copied!