টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রাতভর গোলাগুলি, আতঙ্কে বাসিন্দারা

মনসুর আলম মুন্না , স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার

প্রকাশিত: ১০ নভেম্বর, ২০২৫, ০৪:৫৬ পিএম

কক্সবাজারের টেকনাফ নয়াপাড়া রেজিস্টার্ড রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রতিদ্বন্দ্বী দুটি রোহিঙ্গা গ্রুপের মধ্যে রাতভর গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে পুরো ক্যাম্প এলাকা যেন যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়। মুহুর্মুহু গুলির শব্দে থমথমে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় ক্যাম্পজুড়ে, আতঙ্কে ঘরবন্দি হয়ে পড়েন হাজারো রোহিঙ্গা বাসিন্দা।

রবিবার (৯ নভেম্বর) রাত ১০টার পর থেকে বিরতিহীনভাবে শুরু হওয়া এ গোলাগুলি রাত ১টা পর্যন্ত চলে। টানা গুলির শব্দে পুরো ক্যাম্প এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে টেকনাফ ১৬ এপিবিএন ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি) মোহাম্মদ কাউছার সিকদার বলেন, নুর কামাল ও সাদ্দাম গ্রুপ একত্র হয়ে সালেহ গ্রুপের বিরুদ্ধে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চালায়। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এপিবিএন সদস্যরা একাধিক ফাঁকা গুলি ছোড়ে। বর্তমানে ক্যাম্পের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

তিনি আরও জানান, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে একটি বিশেষ টিম পাহাড়ে অবস্থান করছে। ক্যাম্পে কেউ অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে চাইলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোহিঙ্গা মাঝি বলেন, প্রতিদিন ক্যাম্প ও আশপাশের পাহাড়ি এলাকায় সশস্ত্র গ্রুপগুলোর মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে। সাধারণ রোহিঙ্গারা আতঙ্কে দিন পার করছে। আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি, যেন এ ধরনের সংঘর্ষ বন্ধ হয়।

এদিকে, টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শফি, তোহা, সাদ্দাম, নুর কামাল ও সালেহসহ বেশ কয়েকটি সশস্ত্র গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। এসব গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পের ভেতর ও আশপাশের পাহাড়ি এলাকায় প্রায়ই গোলাগুলি, অপহরণ, চাঁদাবাজি ও ডাকাতির মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ঘটছে। এতে সাধারণ রোহিঙ্গা শরণার্থীরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।

সম্প্রতি এপিবিএন তোহা গ্রুপের প্রধান তুহাকে আটক করেছে। এছাড়া র‍্যাব অভিযান চালিয়ে ডাকাত শফি গ্রুপের প্রধান শফিকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ গ্রেপ্তার করেছে। তবে অন্যান্য সশস্ত্র গ্রুপের প্রধানরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন।

Advertisement

Link copied!