Noman Group Advertisement

একই জমির দলিল দুই ব্যাংকে বন্ধক রেখে ১০৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ

নিজস্ব সংবাদদাতা , প্রতিদিনের কাগজ

প্রকাশিত: ১৪ জুন, ২০২৫, ০৪:১০ পিএম

একই জমির দলিল দুই ব্যাংকে বন্ধক রেখে ১০৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী আবু সাঈদ চৌধুরী সম্রাট। সময়মতো ঋণ পরিশোধ না করায় ব্যাংক দুটি তার কাছে এখন পাচ্ছে ৩৬০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। সম্রাট মেসার্স সিদ্দিক ট্রেডার্স ও সাঈদ ফুডস লিমিটেডের মালিক। নগরের জুবিলী রোডে টাওয়ার ইন হোটেলের পাশে ২৮ শতক সম্পত্তি আছে তার, যেখানে পাঁচতলা ভবন নির্মাণাধীন। এই জমি দেখিয়েই তিনি দুই ব্যাংকের টাকা নিয়ে তা আত্মসাৎ করেন। জানা গেছে, চট্টগ্রাম সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে রেজিস্ট্রিকৃত (নম্বর-৬৫৩৮) বন্ধকি দলিলমূলে ২৮ শতক সম্পত্তি দেখিয়ে ওয়ান ব্যাংক খাতুনগঞ্জ শাখা থেকে ২০১১ সালের ১৩ এপ্রিল মেসার্স সিদ্দিক ট্রেডার্সের নামে ৪৯ কোটি টাকা ঋণ নেন সম্রাট। এরপর ১৬ জুন সাঈদ ফুডস লিমিটেডের নামে ঋণ বাড়িয়ে নেন ৫৪ কোটি ১৮ লাখ টাকা। ওয়ান ব্যাংকের ঋণ সুদ-আসলে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ১৮১ কোটি টাকা। অপরদিকে সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে একই জমির আরেকটি (নম্বর-৭০৬৪) বন্ধকি দলিল তৈরি করে সোনালী ব্যাংক লালদীঘি করপোরেট শাখায় বন্ধক রেখে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল মেসার্স সিদ্দিক ট্রেডার্সের নামে ৫১ কোটি টাকা ঋণ নেন সম্রাট। সুদ-আসলে সোনালী ব্যাংকের ঋণ বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ১৭৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। ঋণখেলাপি সম্রাট টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় সোনালী ব্যাংক তার বন্ধকি সম্পত্তি নিলামে তুলে। জালিয়াতির মাধ্যমে একই সম্পত্তি দুই ব্যাংকে বন্ধক রাখার কারণে গত ৩০ জানুয়ারি আদালতে সম্রাটের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও জালিয়াতির মামলা করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এরপর বিষয়টি নজরে আসে ওয়ান ব্যাংক কর্তৃপক্ষের। তারা সম্রাটের কাছে পাওনা দাবি করলে গত ৯ মে তিনি বন্ধক রাখা সম্পত্তি বিক্রি করে ঋণ সমন্বয় করতে আবেদন করেন। তবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এতে রাজি হয়নি। আবু সাঈদ চৌধুরী সম্রাট তার সম্পত্তি বিক্রি করে ঋণ সমন্বয় করার জন্য ওয়ান ব্যাংকে আবেদন করেছেন দাবি করে বলেন, এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে। সোনালী ব্যাংক লালদীঘি করপোরেট শাখার ডিজিএম আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘ঋণখেলাপি সম্রাটের কাছে ব্যাংক পাচ্ছে ১৭৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। বারবার অবগত করার পরও তিনি ঋণ পরিশোধ করেননি। পরে তার বন্ধকি সম্পত্তি নিলামে তুললে দেখা যায়, তিনি একই জমি দুই ব্যাংকে বন্ধক রেখে ঋণ নিয়েছেন’। ওয়ান ব্যাংকের লিগ্যাল অ্যাফেয়ার্স ম্যানেজার জুয়েল দাশ জানান, ‘সম্রাট ২৮ শতক জমি বন্ধক রেখে ৫৪ কোটি ১৮ লাখ টাকা ঋণ নেওয়ার পর পরিশোধ না করায় অর্থঋণ আদালতে মামলা করা হয়। এরইমধ্যে সোনালী ব্যাংকের মামলার নথি দেখে দুই ব্যাংক থেকে সম্রাটের ঋণ নেওয়ার বিষয়টি জানতে পারি। তার বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও প্রতারণার মামলা করা হয়েছে’। ছাতা ব্যবসার পাশাপাশি ২০০৭ সালের দিকে খাতুনগঞ্জে ভোগ্যপণ্য ব্যবসা শুরু করে ছিদ্দিক ট্রেডার্সের কর্ণধার আবু সাঈদ চৌধুরী সম্রাট। মূলত বাবার প্রতিষ্ঠিত ছিদ্দিক ট্রেডার্সের সুনামকে পুঁজি করে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ সুবিধা নেন তিনি।

Advertisement

Link copied!