গাজীপুরে এতদিন সংসদীয় আসন ছিল ৫টি। তবে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন নতুন একটি আসন (নং-১৯৮) যুক্ত করেছে। শিল্প-শ্রমিক অধ্যুষিত গাজীপুরে ভোটার সংখ্যা ও ভৌগলিক বাস্তবতা বিবেচনায় আত্মপ্রকাশ ঘটেছে গাজীপুর-৬ আসনের।
তবে পূবাইলবাসীর দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রাম ও আশ্বাস সত্ত্বেও ৪০, ৪১ ও ৪২ নং ওয়ার্ডকে গাজীপুর-৫ (কালীগঞ্জ) আসনে রাখায় ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। পূবাইল সর্বদলীয় ঐক্য সংগ্রাম পরিষদ একে “সুপরিকল্পিত বঞ্চনা” বলে আখ্যা দিয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের সদ্য প্রকাশিত গেজেট অনুযায়ী, গাজীপুর মহানগরীর গাছা, পূবাইলের একটি অংশ এবং টঙ্গী পূর্ব-পশ্চিম থানার কয়েকটি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত নতুন আসনে ভোটার সংখ্যা ৫ লাখ ৪০ হাজার ২৫৪ জন।
প্রশ্ন জাগছে—কে হবেন গাজীপুর-৬ এর প্রথম সংসদ সদস্য? এ নিয়ে এখন ভোটারদের মধ্যে চলছে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। তবে এরই মধ্যে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে টঙ্গীর সরকার পরিবার। বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে এক পরিবারের চারজন প্রার্থী মাঠে নামায় পুরো এলাকায় রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে।টঙ্গীজুড়ে উত্তেজনা, প্রথম এমপি কে— তা নিয়ে ভোটারদের তুমুল আলোচনা সমালোচনা।
সবচেয়ে এগিয়ে আছেন সাবেক সংসদ সদস্য, মহানগর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব হাসান উদ্দিন সরকার। তার সমর্থকরা আশাবাদী, গাজীপুর-৬ এর প্রথম এমপি হিসেবে তাকেই দেখতে যাচ্ছে জনগণ।
তার ছোট ভাই, মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সালাহ উদ্দিন সরকারও দলের সবুজ সংকেত পেয়েছেন বলে দাবি তার কর্মী-সমর্থকদের। গত ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র্যালীতে ‘ভি’ চিহ্ন প্রদর্শন করে তিনি নিজের প্রস্তুতির জানান দেন।
এছাড়া তাদের চাচাতো ভাই ও বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক রাকিব উদ্দিন সরকার পাপ্পু, যিনি বহিষ্কৃত হলেও নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। আরেক তরুণ নেতা, টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপির সভাপতি সরকার জাভেদ আহমেদ সুমনও সরব প্রচারণায় নেমেছেন।
সরকার পরিবারের বাইরেও যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের একাধিক তরুণ নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে মাঠে নেমেছেন। বিশেষ করে প্রভাষক বসির উদ্দিন, আরিফ হোসেন হাওলাদার, জসিম উদ্দিন ভাট ও গাজী সালাহউদ্দিন প্রমুখও এলাকায় গণসংযোগ চালাচ্ছেন।
অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী এখনো প্রার্থী ঘোষণা না করলেও কৌশলী অবস্থান নিয়েছে বলে জানা গেছে। বিএনপির চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণার পর তারাও কোনো চমক দেখাতে পারে বলে রাজনৈতিক মহলে ধারণা জোরালো হয়েছে।
সবমিলিয়ে গাজীপুর-৬ আসনে সরকার পরিবারের চার প্রার্থীর সক্রিয় উপস্থিতি নির্বাচনী উত্তেজনা বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। ভোটারদের প্রত্যাশা—এই আসনেই দেখা যাবে বিএনপির ভেতরের আসল শক্তিমত্তা ও একই পরিবারের ভেতরে নীরব প্রতিযোগিতা।
আপনার মতামত লিখুন :