Noman Group Advertisement

নবীনগরে শিক্ষককে ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনা

মোঃ হোসাইন ইসলাম , নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৭:৩২ পিএম

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে দীর্ঘ ৩২ বছর শিক্ষকতা করার পর এক শিক্ষককে ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে রাজকীয় বিদায়-সংবর্ধনা দিয়েছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলার বিটঘর রাধানাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক হুমায়ুন কবিরকে এ রাজকীয় বিদায় জানানো হয়। বিদায়ী শিক্ষককে ঘোড়ার গাড়িতে তুলে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী অতিথিদের নিয়ে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার বের করা হয়। বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাটি বিটঘর বাজারের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিদায়ী শিক্ষক হুমায়ুন কবিরকে তার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। শোভা যাত্রার পূর্বে বিদায়ী শিক্ষক হুমায়ুন কবিরকে অত্র বিদ্যালয় ও বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন' বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল করিম। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা ও প্রাক্তন ছাত্র সাজেদুল ইসলাম পলাশ, বিটঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহেদী জাফর দস্তগীর, সহকারী প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম, সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ধীরেন্দ্র চন্দ্র চৌধুরী, সাবেক ছাত্র মোঃ মোশারফ হোসেন, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য তৌফিকুল হক বাবু, সাবেক সদস্য রিপন মিয়া, কামাল সরকার ও ছোটন মিয়া, বিদ্যালয়ের সাবেক হেড মাওলানা ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আলহাজ্ব ইলিয়াস মিয়া, সাবেক সিনিয়র শিক্ষক আব্দুল হাই, প্রাক্তন ছাত্র মো. শেখ আরিফ, সাবেক স্কুল সহকারী অনিন্দ্র চন্দ্র মজুমদার ও সুরাইয়া বেগম প্রমুখ। প্রাক্তন শিক্ষার্থী সাজেদুল ইসলাম পলাশ বলেন, হুমায়ুন কবির স্যার খুবই ভালো মানুষ ছিলেন। লেখাপড়ার পাশাপাশির জীবন-দক্ষতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে পাঠ্যক্রম অনুযায়ী আমাদেরকে শিক্ষা দিতেন তিনি। বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকরা বলেন, ১৯৯৩ সাল থেকে এই প্রতিষ্ঠানে সততা ও নিষ্ঠার সাথে দীর্ঘ ৩২ বছর কেটে দিয়েছেন তিনি। আমাদের সাথে তার এই দীর্ঘ পথচলা। আজ বিদায় নিলেন আমাদের প্রিয় সহকর্মী। তিনি ছিলেন পরামর্শদাতা ও পথচলার সাথি। তার সুস্থতা ও সুন্দর জীবনের জন্য সবার দোয়া কামনা করছি। বিদায়ী শিক্ষক হুমায়ুন কবির বলেন, ১৯৯৩ সাল থেকে এই বিদ্যালয়ে আছি। আজ আমার শেষ কর্মদিবস। প্রিয় জায়গা ছেড়ে যেতে হচ্ছে। এ রকম বিদায় আমাকে অভিভূত করেছে। সবার ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার কারণেই আজকের এই দিন সম্ভব হয়েছে। সবাই দোয়া করবেন অবসর সময়টা যেন পরিবারকে নিয়ে সুন্দরভাবে কাটাতে পারি। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নাজমুল করিম বলেন, এ রকম রাজকীয় বিদায় শুধু আমাদের প্রতিষ্ঠানের এটিই প্রথম। বলতে গেলে বিদ্যালয়ের ইতিহাস হয়ে থাকবে। সেই সাথে এ অঞ্চলের শিক্ষাঙ্গণের জন্যও একটি গৌরবের দিন। একজন প্রকৃত শিক্ষক মানুষের হৃদয়ে কীভাবে স্থান করে নিতে পারেন, আজকের এই আয়োজন তারই প্রমাণ।

Link copied!