গাজীপুর মহানগরের শিমুলতলীতে মঙ্গলবার বিকেলে অনুমতিহীন ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলায় চলন্ত নাগরদোলা হেলে পড়ে অন্তত পাঁচজন আহত হন। ঘটনাটির পর আহতদের গোপনে সরিয়ে নেওয়া এবং সাংবাদিকদের ছবি তুলতে বাধা দেওয়ায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে স্থানীয়দের মধ্যে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, সম্প্রতি গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে একের পর এক মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। অনেক মেলা প্রশাসন বন্ধ করলেও আবার নতুন করে শুরু হচ্ছে। এসব অনিয়মিত আয়োজনের কারণে জননিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ছে। আগামী সপ্তাহে পূবাইল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে একদিনের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আসন্ন লক্ষ্মী দশমীর নামে ৭ দিনের মেলা বসতে যাচ্ছে। যা গত বছর শিক্ষার্থীদের পড়া লেখার অসুবিধা ও স্কুল বারিন্দায় আয়োজন করে।পাশাপাশি দোকানদারদের থেকে বিরাট অংকের টাকা চাঁদাবাজির জন্য প্রশাসন বন্ধ করে দিয়েছিল। আবারও গোপনে আয়োজন চূড়ান্ত বলে জানিয়েছেন একটি সূত্র।
জয়দেবপুর ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুস ছামাদ জানান, বালুর ওপর এ ধরনের ভারী নাগরদোলা বসানো নিয়মবহির্ভূত। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যায়। অথচ আয়োজকরা কার অনুমতি নিয়ে এ ঝুঁকিপূর্ণ আয়োজন করেছেন, তা স্পষ্ট নয়।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কমিশনার মোহাম্মদ জাহিদুল হাসান বলেন, মেলার অনুমতির জন্য কেউ আবেদন করেনি। একই কথা জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সালমা খাতুনও। জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানান, শুধু অবহিতকরণ চিঠি দেওয়া হয়েছিল, কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি। অন্যদিকে, মেলা আয়োজকদের দাবি,সেনাবাহিনী অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু গাজীপুর ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের নির্বাহী কর্মকর্তা আবুজর গিফারী স্পষ্ট করেন, কেবল জানানো হয়েছিল, অনুমতি দেওয়া হয়নি।
স্থানীয় ডুয়েট শিক্ষার্থীরাও এ মেলার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে। তারা বলছে, এই আয়োজন তাদের পড়াশোনা ও পরিবেশে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ঘটনা কেবল দুর্ঘটনা নয়; বরং সামাজিক ব্যাধিরই প্রতিফলন। বিনোদনের নামে অনিয়ম, দায়সারা মনোভাব আর আইন উপেক্ষা যেন দিন দিন সাংস্কৃতিক অবক্ষয়ের পরিবর্তে সামাজিক ব্যাধি হিসেবে গড়ে উঠছে।
আপনার মতামত লিখুন :