ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় সাংবাদিক কামাল হোসেনের নামে চাঁদাবাজির মামলা

নিজস্ব সংবাদদাতা , প্রতিদিনের কাগজ

প্রকাশিত: ০৯ অক্টোবর, ২০২৫, ০২:৪২ পিএম

সাংবাদিক মো. কামাল হোসেন

ফেসবুকে একটি পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে সাংবাদিক মো. কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করা হয়েছে। তিনি স্থানীয় সাপ্তাহিক সোনালী শীষ পত্রিকার সাংবাদিক।

অভিযোগে বলা হয়েছে, জাতীয় পার্টির প্রভাবশালী নেতা মনির চৌধুরী তার বিরুদ্ধে ফেসবুকে একটি পোস্ট প্রকাশের পর সাংবাদিক কামাল হোসেন নাকি তার কাছে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দাবি করেন। অর্থ না দিলে সামাজিক মাধ্যমে বদনাম করার হুমকি দেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং—৩৬(৮)-২০২৫। মামলার বাদী জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা মনির চৌধুরী।

তবে অভিযুক্ত সাংবাদিক মো. কামাল হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি শুধুমাত্র পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছি এবং একটি সত্য ঘটনা ফেসবুকে প্রকাশ করেছি। এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ ও আমাকে হয়রানির উদ্দেশ্যে করা মামলা।”

এ ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিক সমাজ তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন, এটি সাংবাদিকদের ভয় দেখানোর কৌশল এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত।

মামলার বাদী মনির চৌধুরী দাবি করেন, “সাংবাদিক কামাল হোসেন দীর্ঘদিন ধরে আমার নামে অপপ্রচার চালাচ্ছে। সে দুইবার ৫ হাজার টাকা নিয়েছে, আরও দুই লাখ টাকা দাবি করেছে।”

তবে প্রতিদিনের কাগজের পক্ষ থেকে প্রশ্ন করা হলে, “চাঁদাবাজি নয়, আপনি কেন সাইবার আইন বা মানহানি আইনে মামলা করলেন না?”—এমন প্রশ্নে মনির চৌধুরী কোনো জবাব দিতে পারেননি। তিনি শুধু বলেন, “পুলিশের এক ডিআইজি সাহেবের সঙ্গে আমার সম্পর্ক আছে, তাই তাঁকে বলেই মামলা করিয়েছি।”

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি শিবিরুল ইসলাম বলেন, “আমাকে কোনো ডিআইজি স্যার বলেননি। প্রাথমিক সত্যতা থাকায় মামলা নিয়েছি।”

তবে তিনি স্বীকার করেন যে, ঘটনাটি সাইবার অপরাধসংক্রান্ত হলেও সিআইডির একটি মতামতের ভিত্তিতে চাঁদাবাজি ধারায় মামলা নেওয়া হয়েছে।

তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সোহেল রানা বলেন, “সাইবার ক্রাইম ইউনিট থেকে আমার কাছে কোনো মতামত আসেনি। তাছাড়া সাইবার অপরাধের বিষয়ে তাদের মতামত দেওয়ার এখতিয়ারও নেই।”

সাংবাদিক নেতা সোহাগ আরেফিন বলেন, “এটি একটি হাস্যকর পরিস্থিতি। সাইবার অপরাধের ঘটনায় চাঁদাবাজির মামলা নেওয়া পুলিশের পুরনো মানসিকতারই বহিঃপ্রকাশ।”

Link copied!