সারা দেশে সব অবৈধ ইট ভাটা গুঁড়িয়ে দিতে বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসিদের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে অবৈধ ইটভাটা ও ইটভাটার জ্বালানি হিসেবে কাঠের ব্যবহার বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় তার ব্যাখ্যা দিতে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং সিলেট, রাজশাহী, বরিশাল, রংপুর ও ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনারকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।
আগামী ১৭ মার্চ তাদের সশরীরে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। তারই ধারাবাহিকতায় বগুড়া প্রশাসন ও জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে অবৈধ ইটভাটা গুড়িয়ে দিয়ে বন্ধ ঘোষণা করা হচ্ছে। এ নিয়ে বিপাকে ও চরম ক্ষতির সম্মুখে ইটভাটা মালিক ও শ্রমিকরা।
বগুড়া জেলায় ২১৮টি ইটভাটা থাকলেও এর মধ্যে অনুমোদন আছে মাত্র ১৭টিতে। এই হিসাবে জেলার ৯২ শতাংশ ইটভাটাই অবৈধ। জেলার ২০১টি অবৈধ ইটভাটার মধ্যে সদরে ১২টি, শাজাহানপুরে ৩২টি, সোনাতলায় ৪টি, আদমদীঘিতে ৮টি, কাহালুতে ১০টি, দুপচাঁচিয়ায় ৮টি, ধুনটে ১৯টি, গাবতলীতে ৩৭টি, শিবগঞ্জে ৩১টি এবং শেরপুরে রয়েছে ২৬টি। তবে স্থানীয় পরিবেশবাদীদের দাবি জেলায় অনুমোদনহীন ইটভাটার সংখ্যা আরও অনেক বেশি।আদালতের নির্দেশনার পর ভাটা মালিক ও হাজার হাজার শ্রমিকরা পড়েছে চরম বিপাকে।
এ বিষয়ে ভাটা মালিকরা তাদের দুর্ভোগ ও দুর্গতির কথা তুলে ধরেন। ভাটা মালিকরা জানান,আমাদের ভাটার ছাড়পত্র বা লাইসেন্স না থাকলে। আমরা মহামান্য হাইকোর্টে লাইসেন্স ও ছাড়পত্রের জন্য রিট পিটিশন করেছি। আমরা ভাটার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি, এখন ভরা সিজন। এসময় ভাটা বন্ধ হলে কোটি কোটি টাকা লোকসানে পড়বে ভাটা মালিকরা।
এ বিষয়ে ভাটা মালিক চুন্নু মিয়া বলেন, ভাটা বন্ধ হলে আমরা মাঠে মারা যাব। সব শেষ হয়ে যাবে। এছাড়া জেলায় ২১৮ টি ভাটায় প্রায় পাঁচ লক্ষ ও বেশী নারী পুরুষ শ্রমিকের কাজ করছে। যদি বন্ধ হয়ে যায় তাহলে এ লোকগুলো বেকার হয়ে পড়বে। ভাটা মালিকরা দেউলিয়া হয়ে যাবে।
ইটভাটা শ্রমিক আমজাদ আলী জানান, ঈদের আগে যদি ভাটা বন্ধ হয়ে যায় তাহলে আমাদের হাজার হাজার পরিবারের লোকদের নিয়ে রাস্তায় বসতে হবে। আমাদের কথা ভেবে যদি অনন্তত এসিজনটা ভাটা চলে তাহলে আমরা উপকৃত হব।
এ বিষয়ে বগুড়া জেলা প্রশাসক, হোসনা আফরোজা বলেন, আদালতের নির্দেশনার বাহিরে কিছুই করার নেই। পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে আইন প্রয়োগ করতেই হবে। সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রীট পিটিশন এর প্রেক্ষিতে জেলার সকল অবৈধ ইটভাটা বন্ধ ও ভাটায় কাঠের ব্যবহার বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :