মরদেহ উদ্ধারের ২৪ ঘন্টার মধ্যেই রহস্য উদ্ঘাটন

আসলাম হোসেন অলি , ঘাটাইল (টাংগাইল)সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ২৭ অক্টোবর, ২০২৫, ০৫:১৬ পিএম

ছবি- প্রতিদিনের কাগজ

স্কুলছাত্র রুহুল আমীন হত্যাকাণ্ডের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রহস্য উদ্ঘাটন ও আসামি গ্রেপ্তার করছে পুলিশ। ঘটনার রাতেই তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘাটাইল সদর ইউনিয়নের নিয়ামতপুর গ্রামের আব্দুল আলীমকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্য অনুসারে ওই রাতেই মধুপুর উপজেলায় অভিযান যালিয়ে অটোরিকশা ও ব্যাটারী উদ্ধার করে পুলিশ।

আগামী বছর এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল রুহুল আমীনের (১৬)। অভাবের সংসারে অর্থের যোগান দিতে লেখাপড়ার পাশাপাশি মাঝে মাঝে কোমল হাতে ধরত অটোরিকশার হ্যান্ডেল। সেই হ্যান্ডেল ধরাই কাল হয় তার। ছিনতাইকারীরা অটোরিকশার সঙ্গে তার প্রাণটাও ছিনিয়ে নেয়। শ্বাসরোধে হত্যা করে তাকে। বৃহস্প্রতিবার রাতে সন্ধানপুর ইউনিয়নের ছাগলেরটিকি এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। রুহুল আমীন ঘাটাইল সদর ইউনিয়নের নিয়ামতপুর গ্রামের রফিক মিয়ার ছেলে।

পুলিশ জানায়, নিহত রুহুল আমীন এবং আসামি আব্দুল আলীমের বাড়ি পাশাপশি। ২১ অক্টোবর নিখোঁজ হয় রুহুল। ওইদিন দুপুরে রুহুল আমীন অটোরিকশা নিয়ে বের হলে সঙ্গে আসেন আলীম। রুহুলকে হত্যা ও অটোরিকশা ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পা আগে থেকেই করে রাখেন আলীম। পরিকল্পনা অনুসারে রাস্তা থেকে আপন মিয়া নামে এক যুবককে তুলে নেন আলীম। মাকড়াই-কুড়িপাড়া সড়কের ছাগলের টিকি এলাকায় নিয়ে গিয়ে প্রথমে রুহুল আমীনের গলা চেঁপে ধরে  আলীম। এরপর রুহুলের শার্ট খুলে আলীম ও আপন মিয়া মিলে শ্বাসরোধে হত্যা করে বনের পাশে ফেলে দিয়ে অটোরিকশা নিয়ে চলে যায়। সঙ্গে নিয়ে যায় রুহুল আমীনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন। এই ফোনের সূত্র ধরেই আলীমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার দেওয়া তথ্য অনুসারে মধুপুর উপজেলা থেকে অটোরিকশা ও ব্যাটারি উদ্ধার করে পুলিশ। এখনো পলাতক রয়েছে আসামি আপন মিয়া। আলীমকে শনিবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দিনমজুর রফিক মিয়ার চার সন্তান। বড় দুই মেয়ে বিয়ে দিয়েছেন। তৃতীয় সন্তান রুহুল আমীন রামপুর হাসান পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। অস্বচ্ছল পরিবারে একটু স্বচ্ছলতা আনতে কলমের পাশাপাশি মাঝেমাঝে হাতে ধরত অটোরিকশার হ্যান্ডেল। ভাড়া করা অটোরিকশা নিয়ে অধিকাংশ সময় বের হতো স্কুল শেষে।

ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোশাররফ বলেন, মামলা হওয়ার ২৪ ঘণ্টার আগেই হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন ও দুই আসামির একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Link copied!