সারিয়াকান্দিতে হাইব্রিড কাঁচামরিচ বাজারে আসায় কমছে দাম

অনলাইন ডেস্ক , প্রতিদিনের কাগজ

প্রকাশিত: ২৭ অক্টোবর, ২০২৫, ০৫:২০ পিএম

ছবি- প্রতিদিনের কাগজ

রাশেদ, সারিয়াকান্দি: বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে হাইব্রিড মরিচের হারভেস্টিং শুরু হয়েছে। চরাঞ্চলের কাঁচা মরিচ বাজারে আসতে শুরু করায় বাজারে মরিচের দাম নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করেছে। বৃষ্টির জন্য আগাম কাঁচা মরিচ বাজারে উঠতে দেরি হলেও, অনুকূল আবহাওয়ার কারণে মরিচ গাছগুলোতে মরিচ ধরতে শুরু করেছে। আগাম কাঁচামরিচ বাজারজাত করে বাজারে ভালো দাম পেয়ে কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে।

গত কয়েকদিন আগেও সারিয়াকান্দি বাজারে ৩০০ টাকা কেজিতে কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে। তবে বাজারের জন্য সুসংবাদ বয়ে নিয়ে আসছে চরাঞ্চলের উৎপাদিত হাইব্রিড জাতের কাঁচা মরিচ। মরিচগুলো বাজারে উঠতে শুরু করেছে। উপজেলার চরাঞ্চলজুরে এখন বিভিন্ন জাতের সবুজ মরিচ গাছ শোভা পাচ্ছে।

এ বছর বন্যা না হওয়ায় কৃষকরা চরাঞ্চলের জমিতে আগামভাবে বিভিন্ন জাতের হাইব্রিড মরিচ জমিতে আবাদ করেছেন। শুরুতে বৈরী আবহাওয়ায় মরিচগাছ কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ হলেও, এখন আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মরিচ গাছগুলো তরতর করে বেড়ে উঠেছে। বেশিরভাগ মরিচ ক্ষেতে মরিচ ধরেছে এবং তা পরিপক্ব হতে শুরু করেছে। যা কৃষকরা সবেমাত্র বাজারে তুলতে শুরু করেছেন। তাই বাজারে কাঁচা মরিচের দামও কমতে শুরু করেছে।

সারিয়াকান্দির বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে সেখানে প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ ১৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে, যা গত কয়েকদিন আগেও দ্বিগুন দামে বিক্রি হয়েছে। সদর ইউনিয়নের চরবাটিয়ার কৃষক মিঠু মিয়া গত আগষ্ট মাসের শেষের দিকে তিনি তার ১০ বিঘা জমিতে হাইব্রিড মরিচের চারা রোপণ করেছিলেন। গত কয়েকদিন আগে তিনি তার জমির মরিচের প্রথম তোলা দিয়েছেন। প্রথম তোলায় তিনি ৫ মণ মরিচ পেয়েছেন। দু একদিনের মধ্যেই তিনি দ্বিতীয় তোলা দেয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন। তিনি গত বছরও হাইব্রিড আগাম জাতের মরিচের চাষ করে বেশ লাভবান হয়েছেন।

কৃষক মিঠু মিয়া বলেন, প্রথমে একেবারেই কম মরিচ হয় গাছে। তার পরের তোলা থেকে প্রচুর পরিমানে মরিচ জমি থেকে উত্তোলন করা যায়। এ বছর বন্যা না হওয়ায় আগামভাবে মরিচ উৎপাদন করতে পেরেছেন। যা বাজারে বিক্রি করে বেশ ভালো দাম পেয়েছেন। এ উপজেলার চরাঞ্চলের মরিচ বাজারে উঠতে শুরু করায় বাজারে মরিচের দাম নিয়ন্ত্রণে এসেছে। শুরুতে বৈরী আবহাওয়ার কারণে মরিচগাছ কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ হলেও এখন আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মরিচের বেশ ভালো ফলন হয়েছে।

সারিয়াকান্দি কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর এ উপজেলায় সর্বমোট ৩২০০ হেক্টর জমিতে মরিচের আবাদ হয়েছে। এ বছর মরিচ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩৩১০ হেক্টর। যা ২২৭০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। যা এখনো চলমান রয়েছে। এর মধ্যে ১৬০০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড মরিচের আবাদ হয়েছে এবং ৬৭০ হেক্টর জমিতে দেশী উফশী জাতের মরিচ চাষ হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৫০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড জাতের মরিচ উত্তোলন শুরু হয়েছে।

সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, যমুনা এবং বাঙালি নদীর অববাহিকায় অবস্থিত সারিয়াকান্দির মাটি বেলে দোঁআশ। তাই এ মাটি প্রাচীনকাল থেকেই মরিচচাষের জন্য বেশ উপযোগী। বগুড়ার সারিয়াকান্দির মরিচের খ্যাতি বাংলাদেশ জুড়ে রয়েছে। এখানে প্রতিবছর প্রচুর পরিমানে মরিচ উৎপন্ন হয়। গত কয়েকদিন ধরেই কৃষকেরা আগাম জাতের কাঁচা মরিচ উত্তোলন এবং তা বাজারজাত করতে শুরু করেছেন এবং ভালো দামে বিক্রি করছেন। সারিয়াকান্দির মরিচ বাজারে উঠতে শুরু করায় মরিচের বাজার স্থিতিশীল হতে শুরু করেছে।

Link copied!