বগুড়ার শিবগঞ্জে আমন ধানের মাঠে ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়েছে কারেন্ট পোকার আক্রমণ। হঠাৎ করেই ধানক্ষেতে এই পোকার আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন প্রান্তিক কৃষকরা। বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশক স্প্রে করেও কোনো সুফল পাচ্ছেন না তারা। ফলে নষ্ট হচ্ছে স্বপ্নের ফসল, বাড়ছে হতাশা।
সরেজমিনে শিবগঞ্জের বিভিন্ন ইউনিয়নের আমন ক্ষেত ঘুরে দেখা যায়, একের পর এক জমিতে ধানগাছ শুকিয়ে গেছে। ক্ষেতে ভিড় জমিয়েছে কারেন্ট পোকার ঝাঁক। নষ্ট হয়ে গেছে কৃষকের সোনার ফসল।
কৃষকরা জানান, এবছর আমন মৌসুমের শুরুতে পানি সংকট বা চারা রোপণে তেমন সমস্যা ছিল না। তবে সারের দাম ছিল অনেক বেশি। তবুও কষ্ট করে বেশি দামে সার কিনে ধান চাষ করছেন তারা। কিন্তু হঠাৎ কারেন্ট পোকার আক্রমণে সব পরিশ্রম যেন মাটি হয়ে যাচ্ছে।
উপজেলার দেউলী ইউনিয়নের মধুপুর গ্রামের কৃষক মিনহাজ আলী বলেন, "ধানগাছ শুরু থেকে ভালোই ছিল, কিন্তু বাড়িঘরের কাজের চাপে ৩ দিন মাত্র জমিতে যেতে পারিনি। এর মধ্যেই কারেন্ট পোকা সব শেষ করে দিয়েছে।"
তিনি আরও বলেন, "আর কিছুদিন পরেই ধান কাটার উপযুক্ত হতো। কিন্তু কারেন্ট পোকা সব শেষ করে দিলো। দিনে দুইবার করে ওষুধ দিচ্ছি তাও কোনো কাজ হচ্ছে না। গোড়া থেকে গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। এভাবে নষ্ট হলে ধানের খরচই উঠবে না।"
উপজেলার সিহালী মাস্টারপাড়া গ্রামের শাহিনুর মন্ডল বলেন, "আমার ধানক্ষেতে একদিকে ইঁদুরের হানা, আরেকদিকে কারেন্ট পোকার হানা। তাদের অত্যাচারে ধান নিয়ে হতাশায় পরেছি। তারমধ্যে আবার কীটনাশক কিনতে পড়তে হচ্ছে বিভ্রান্তিতে। বাজারে যত কম্পানির ওষুধ নামছে, কোনটা আসল আর কোনটা নকল বুঝা বড় দায়। নকল ওষুধ কিনে টাকা নষ্ট করছি, ফসলেরও কাজ হচ্ছে না।"
এবিষয়ে শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান জানান, কারেন্ট পোকা দমনে করণীয় সম্পর্কে প্রত্যেক ওয়ার্ডে উঠান বৈঠক করা হয়েছে। এছাড়াও বৃষ্টির পর কারেন্ট পোকার যে উপদ্রব হয়, তা থেকে ধান রক্ষায় কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :